লড়াইটা শেষ পর্যন্ত করেছিলেন রোহানাত দৌলা বর্ষণ। তবে শেষরক্ষা করতে পারেননি। সেমির আশায় জল ঢালার সাথে সাথে পাকিস্তান যুব দলের কাছে মাত্র ৫ রানে হেরে গেছে জুনিয়র টাইগাররা।
আইসিসি অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যেতে জুনির টাইগারদের ৩৮.১ ওভারের মধ্যেই পাকিস্তানের দেওয়া লক্ষ্য টপকাতে হতো। ধারাবাহিক বিরতিতে উইকেট পড়লেও সেমির লক্ষ্যের খুব কাছেই পৌঁছে গিয়েছিল জুনিয়র টাইগাররা। বর্ষণের লড়াকু ইনিংস লক্ষ্যের প্রায় কাছে নিয়ে গিয়েছিল তাদের। তবে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি মারুফ মৃধা। তাই পাঁচ রানের হার মেনে নিতে হয়েছে মাহফুজুর রহমান রাব্বির দলকে।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫৫ রানেরই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। সেমিফাইনালে উঠতে ৩৯ ওভারের মধ্যে এই লক্ষ্য ভেদ করতে হবে এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে টাইগাররা। কিন্তু ৩৫ দশমিক ৫ ওভারেই ১৫০ রানের অলআউট হয় বাংলাদেশ। এতে ৫ রানের জন্য বিশ্বকাপের স্বপ্নভঙ্গ হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু করে দুই টাইগার ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি ও জিশান আলম। তার পরও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ৭৭ রানেরই পাঁচ উইকেট হারিয়েছিল রাব্বিরা। এদিন ১২ বলে ১৯ রান করে জিশান আউট হলে, ১১ বলে ৪ রান করে তাকে সঙ্গ দেন শিবলি।
এরপর আরিফুলকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেনি এই ডান হাতি ব্যাটারও। ২০ বলে ৩০ রান করে কট আউট হন তিনি। এতে দলীয় ৪৭ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা।
তবে আহরার আমিনকে সঙ্গে নিয়ে টাইগার শিবিরে হাল ধরেন আরিফুল ইসলাম। তবে ইনিংস বড় করতে পারেনি আমিন। ২৩ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। আমিনের বিদায়ের পর পিচে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরিফুলও। ২০ বলে ১৪ রান করে পয়েন্টে ক্যাচ আউট হন এই ডান হাতি ব্যাটার।
পারভেজ জীবন ৯ বলে ২ রান করে আউট হলে ম্যাচ জেতা কঠিন হয়ে যায় বাংলাদেশে জন্য। তবে মাহফুজুর রহমান রাব্বিকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন শিহাব জেমস। ৪৩ বলে ২৬ রান করে জেমস আউট হলে ৩০ বলে ১৩ রান করে তাকে সঙ্গ দেন রাব্বি।
দুই প্রতিষ্ঠিত ব্যাটার হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ইকবাল হোসেন ইমন ৪ রানে আউট হলে জয়ের জন্য লড়াই করতে থাকেন রোহানত দৌল্লাহ বর্ষণ। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি বাংলাদেশের।
এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন শামিল হোসেন ও শাহজাইব খান। ম্যাচের শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। তবে জুটি গড়ে শক্তিশালী হয়ে উঠার আগেই ম্যাচের নবম ওভারে এ জুটিতে আঘাত হানেন রোহানাত দৌল্লাহ বর্ষণ। দলীয় ৩৭ রানে শামিল হোসেন আউট হবার আগে ১৯ রান করেন তিনি।
এরপর উইকেটে আসেন আজান আওয়াস। তবে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই তাকে সাজঘরের পথ দেখান বর্ষণ। এরপর ক্রিজে আসেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সাঈদ বেগ। দুর্দান্ত থ্রোতে তাকে রান আউট করেন আরিফুল ইসলাম। সাঈদের বিদায়ের পরেই উইকেট বিলিয়ে দেন পাকিস্তান ওপেনার শাহজাইব খানও। দলীয় ৭৬ রানে সাজঘরে ফেরার আগে ২৬ রান করেন তিনি।
৮৯ রানের ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পরে পাকিস্তান। কিন্তু সপ্তম উইকেটে আসফান্দ ও মিনহাজের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে তোলে তারা। এ জুটির ব্যাট থেকে আসে ৪৩ রান। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এ জুটিতে আঘাত হানেন শেখ পারভেজ। দলীয় ১৩২ রানে আসফান্দ আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তাতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাবর-রিজওয়ানদের উত্তরসূরীরা।
শেষ পর্যন্ত ৪০.৪ ওভারে ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন রোহানাত দৌল্লাহ বর্ষণ ও শেখ পারভেজ জীবন।